বালি ভ্রমণ করতে চাচ্ছেন? শেয়ারট্রিপে পেয়ে যাচ্ছেন প্যাকেজ, ফ্লাইট, হোটেল, এবং ভিসা অ্যাসিস্টান্স!
ইন্দোনেশিয়ার সবচেয়ে জনপ্রিয় ভ্রমণস্থান হলো বালি দ্বীপ। সাদা বালির সমুদ্র সৈকত, রেইন ফরেস্ট, আগ্নেয়গিরি, পুরনো মন্দির আর পাম গাছের সমারোহ দেখার জন্য প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ বালি ভ্রমণ করে। আপনিও শেয়ারট্রিপ থেকে ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণ ভিসা নিয়ে এবং ফ্লাইট বুক করে কম খরচে বালি ঘুরে আসতে পারবেন। এজন্য ভ্রমণ আরো সহজ করতে আমরা ইন্দোনেশিয়া ট্যুর প্যাকেজ, সেরা হোটেল ও ফ্লাইটসমূহ নিয়ে কথা বলবো।
ঢাকা টু ইন্দোনেশিয়া বিমান ভাড়া কত?
ঢাকা টু ইন্দোনেশিয়ার বিমান ভাড়া ৩০,০০০ টাকা থেকে শুরু, যা মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স অফার করে থাকে। তবে এইক্ষেত্রে সময়ও বেশি লাগবে, প্রায় ১১ ঘন্টা বা তারও বেশি। তাই সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সে ঢাকা থেকে ইন্দোনেশিয়া গেলে সবচেয়ে ভালো হবে, যেখানে ৪০,০০০ টাকায় সাড়ে ৭ ঘন্টায় যাওয়া সম্ভব। ইন্দোনেশিয়ার ঙুরা রাই এয়ারপোর্ট বা ডেনপাশার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করতে পারবেন। এখান থেকে গাড়িতে করে বালি যেতে ১ ঘন্টা ৪৫ মিনিট লাগে। প্রায় ৯টির মত এয়ারলাইন্স ফিরতি টিকেটে ডেনপাশার আসা যাওয়া করার সুবিধা দেয়। এয়ারলাইন্সের মান, রুট, ও ফ্লাইং ডেট অনুযায়ী টিকেটের মূল্য কম বেশি হয়। এছাড়া ফ্লাইটের মৌসুম, সময় ও ডিমান্ড অনুযায়ী মূল্য কিছৃুটা ওঠানামা করে।
ঢাকা থেকে ডেনপাশারগামী এয়ারলাইন্সসমূহ
- মালয়েশিয়া এয়ারলাইন্স
- সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স
- থাই এয়ারওয়েজ ইন্টারন্যাশনাল
- বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স
- চায়না সাউদার্ন এয়ারলাইন্স
- কাতার এয়ারওয়েজের
- এমিরেটস
- ভিস্তারা
- ক্যাথে প্যাসিফিক এয়ারওয়েজ
ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণ খরচ কত?
সাশ্রয়ী খরচে বালি ভ্রমণের জন্য শেয়ারট্রিপ-এর ইন্দোনেশিয়া ট্যুর প্যাকেজ নিতে পারেন। এতে বিভিন্ন রকম প্যাকেজে জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা থেকে ৭২ হাজার টাকা খরচ করে বিভিন্নরকম সুবিধা নিয়ে ঘুরতে পারবেন। চলুন জনপ্রিয় কয়েকটি প্যাকেজ সম্পর্কে সংক্ষেপে জেনে নিইঃ
ইন্দোনেশিয়া ট্যুর প্যাকেজঃ ওয়ান্ডারফুল ইন্দোনেশিয়া
৩ দিনের প্যাকেজটিতে সুবিধা অনুযায়ী জনপ্রতি ৫ হাজার টাকা থেকে ১১,৫০০ টাকা খরচ হবে। এতে লাক্সারি, স্ট্যান্ডার্ড ও সুপেরিয়র এরকম তিনধরনের সেবা পাবেন। এতে প্রথম দিনে বালি পৌছে দ্বিতীয় দিনে সম্পূর্ণ কুটা ঘুরে তৃতীয় দিনে ফিরে আসতে পারবেন। ট্যুর চলাকালীন সময়ে ফ্যাশন হোটেল লেজিয়ান, লফট লেজিয়ান হোটেল বা কুটা প্যারাডিসো-তে থাকবেন।
ইন্দোনেশিয়া ট্যুর প্যাকেজঃ বালি ব্লিস
৬ দিনের প্যাকেজটিতে সুবিধা বিশেষে ১৯ হাজার টাকা থেকে ৫৫ হাজার টাকা খরচ হবে। এতে প্রথমদিনে বালি পৌছাবেন, দ্বিতীয় দিনে হান্দারা, উলুন্দানু ও তানা লটের বিভিন্ন স্থাপনা দেখবেন। তৃতীয় দিনে পেংলিপুরান, কিন্টামানি, কাংপাক সিরিং ও উবুদ প্যালেসের আশেপাশের সবকিছু দেখবেন। চতুর্থ দিনে মাংকি ফরেস্ট, অ্যালাস অ্যারাম ও পাইরেট ডিনার ক্রুজে নানারকম কর্মকান্ড করে পঞ্চম দিনে বিশ্রাম নিবেন আর ষষ্ঠ দিনে ফিরে আসবেন। এই প্যাকেজে বালি রানী হোটেল অথবা গ্র্যান্ড ইসতামা রামা হোটেলে থাকতে পারবেন।
ইন্দোনেশিয়া ট্যুর প্যাকেজঃ ফাইন্ড পীস অ্যাট ইন্দোনেশিয়া
৭দিনের প্যাকেজটিতে সুবিধা বিশেষে ৩৩ হাজার টাকা থেকে ৩৫ হাজার টাকা খরচ হবে। এতে প্রথমদিনে বালি পৌছাবেন। দ্বিতীয়দিনে বালির বাটিক শপ, সেলুক ভিলেজ, পেইন্টিং, বাতুয়ান টেম্পল, তিগেনুংগান ঝর্ণা, কফি বাগানসহ অনেককিছু দেখবেন। তৃতীয় দিনে নৌকায় করে বালি থেকে গিলি ত্রংগুয়ানে আসবেন। চতুর্থ দিনে বিশ্রাম নিয়ে নিজের মত ঘোরাঘুরি করবেন। পরদিন বালিতে ফিরে আরো একদিন নিজের মত কাটিয়ে সপ্তম দিনে ফিরে আসবেন। ভ্রমণের সময় অ্যাসটন সানসেট বীচ রিসোর্ট, গ্র্যান্ড মেগা রিসোর্ট অথবা ইওফোরিয়া হোটেল লিজিয়ানে থাকবেন।
বালিতে থাকার সেরা হোটেলসমূহ কি কি?
বালিতে থাকার জন্য ১৬০০টির বেশি হোটেল রয়েছে। খুব সাদামাটা হোটেল থেকে শুরু করে অভিজাত চার বা পাঁচ তারকা হোটেলে থাকতে পারবেন। হোটেল থেকে সহজে বিভিন্ন স্থানে যাবার জন্য লফ্ট লেজিয়ান হোটেল, ফ্যাশন হোটেল লেজিয়ান, কুটা প্যারাডিসো হোটেল, বালি রানী হোটেল, গ্র্যান্ড ইস্তানা রামা হোটেল, অ্যাস্টন সানসেট বিচ রিসোর্ট ও গ্র্যান্ড মেগা রিসোর্ট ভালো হবে।
লফ্ট লেজিয়ান হোটেল
ঠিকানাঃ মেলাস্টি ৯৯, লেজিয়ান
কুটার সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র ২০০ মিটার দূরে অবস্থিত লফ্ট লেজিয়ান হোটেল। এয়ারপোর্ট থেকে ২০ মিনিটে গাড়িতে করে এখানে যাওয়া যায়। হোটেলের সব রুম বাহারি লাইটে সাজানো। রুমেই নাস্তা খাবার ও সেফটি ডিপোজিট বক্সে নিজের জিনিস রাখার ব্যবস্থা আছে। শৌচাগারেও আধুনিক প্রক্রিয়াতে সবকিছু রাখা আছে। রুমে বসেই লাঞ্চ বা ডিনার করা যায় বলে হানিমুনে আসা কাপলদের জন্য বেশ সুবিধা। এছাড়া সবরকম মানের ডাবল ও টুইন বেড আছে। চাইলে এক্সট্রা বেডও নিতে পারবেন।
ফ্যাশন হোটেল লেজিয়ান
ঠিকানাঃ ১২১ রায়া লেজিয়ান স্ট্রিট, লেজিয়ান
বাহারি সাজসজ্জা, বড় স্পেস ও আসবাবপত্র পেতে চাইলে ফ্যাশন হোটেল লেজিয়ান আপনার জন্য ভালো হবে। কুটা সমুদ্র সৈকত থেকে মাত্র ১০ মিনিট হেঁটেই হোটেলে যেতে পারবেন। চার তারকা হোটেলটিতে ১৭০টির ও বেশি রুম ও স্যুট আছে। এখানকার বেশিরভাগ রুমের ফ্লোর, দেয়াল ও সিলিং কাঠের নকশা করা। অতিরিক্ত সুবিধা হিসেবে ছোট কনফারেন্স রুম বা থিয়েটার পাবেন। যারা বড় পরিবার নিয়ে ভ্রমণের চিন্তা করছেন তাদের জন্য হোটেলটি একবারে মানানসই। বিনোদনের জন্য এখানে ডিজে ক্লাব ও সুইমিং পুল আছে।
কুটা প্যারাডিসো হোটেল
ঠিকানাঃ জেআই কার্তিকা প্লাজা, তুবান, বালি
কুটা সমুদ্র সৈকতের দক্ষিণে অবস্থিত কুটা প্যারাডিসো হোটেল। বালির হোটেলগুলোর মধ্যে আধুনিকতার শীর্ষে আছে হোটেলটি। ডেনপাশারা এয়ারপোর্ট থেকে ১০ মিনিটে গাড়িতে করে যেতে পারবেন। এখানে বিশাল ২টি আউটডোর পুল আর ৬ রকমের ডাইনিং রয়েছে। এছাড়া বাচ্চাদের জন্য খেলার জায়গা আছে। আধুনিক নকশার সাথে কাঠের কারুকাজে মোড়ানো রুমগুলো বেশ মনোমুগ্ধকর অনুভূতি দেবে। রুমের ভিতরে কফি মেকার আর বার আছে। এছাড়া বড় জানালা দিয়ে বাইরের সৈকত ও প্রকৃতি দেখতে পারবেন।
বালি রানী হোটেল
ঠিকানাঃ জালান কার্তিকা প্লাজা, কুটা
এশিয়ার সবচেয়ে পরিপাটি হোটেলের তালিকায় বালি রাণী হোটেল উপরের সারিতে থাকবে। এয়ারপোর্ট থেকে ১০ মিনিটে গাড়িতে করে এখানে যাওয়া যায়। হোটেলের সবকিছু আধুনিক ও শৈল্পিকভাবে তৈরি করা। রুমের মাঝে কফি মেকার, মিনিবার, সৌনা নেবার সুবিধাসহ নানারকম ব্যবস্থা পাবেন। এছাড়া রুমের বাইরে রিসোর্টের মত বড় সুইমিং পুল ও গার্ডেন এরিয়া আছে। পুলে ম্যাসাজ ও স্পা নেওয়া যায়। এছাড়া এখানে এশিয়ান, ওয়েস্টারর্ন ও সীফুড খাবার ভাল রেস্তোরা আছে।
গ্র্যান্ড ইস্তানা রামা হোটেল
ঠিকানাঃ জে.আই, পান্টাই, কুতা
নিরিবিলি অবকাশ কাটাতে চাইলে সোজা গ্র্যান্ড ইস্তানা রামা হোটেলে চলে যেতে পারেন। কুটা সমুদ্র সৈকতের তীর ঘেষে দাঁড়িয়ে আছে হোটেলটি। হেঁটেই কুটা ও জালান লেজিয়ানের রাতের বর্ণিল সব আয়োজন দেখতে পারবেন। এখানকার সব রুমে কফি মেকার, বার, সেফটি বক্সসহ আধুনিক শৌচাগারের সুবিধা আছে। হোটেলের ডাইনিং থেকে সমুদ্র সৈকত দেখতে দেখতে ইন্দোনেশিয়ান, ইটালিয়ান ও সীফুড খেতে পারবেন। এছাড়া টাকিলা বারে প্রতি সপ্তাহে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও প্রতিরাতে ডিজে পার্টি দেখা যায়।
অ্যাস্টন সানসেট বিচ রিসোর্ট
ঠিকানাঃ গিলি তিরাওয়াংগান, গিলি
বালি দ্বীপের পাশেই সমুদ্রের মাঝে এক টুকরো গিলি দ্বীপে অবস্থিত অ্যাস্টন সানসেট বিচ রিসোর্ট। এটা অ্যাডভেঞ্চার লাভার ও হানিমুন কাপলদের জন্য থাকার সেরা জায়গা। এখানকার সব রুমেই ব্যালকনি অথবা টেরেস আছে। এছাড়া নির্বিঘ্নে পরিবার নিয়ে সময় কাটানোর জন্য হোটেলের বাইরে প্রাইভেট বীচ এরিয়া পাওয়া যায়। এই হোটেলে থেকে সাইকেলিং, স্নোরকেলিংসহ নানারকম বিনোদন কর্মকান্ড করা যাবে। হোটেল থেকে ১ কিলোমিটার দূরে আর্ট মার্কেটে কেনাকাটা করা যায়।
গ্র্যান্ড মেগা রিসোর্ট
ঠিকানাঃ জে.আই বাইপাস, ঙুরা, সিম্পুং সিউর, কুটা
খুব বিলাসীতা ছাড়াও সকল সুবিধা নিয়ে থাকতে গ্র্যান্ড মেগা রিসোর্টে উঠতে পারেন। এয়ারপোর্ট থেকে এখানে যেতে ২০ মিনিট আর কুটু সমুদ্র সৈকতে যেতে ১২ মিনিট সময় লাগে। রিসোর্টে পরিবার বান্ধব পরিবেশের সাথে বিভিন্নরকম সেবা আপনাকে স্বস্তি দেবে। এখানে ইন্দোনেশিয়ান ধাচের ছোট্ট ছোট্ট কটেজ হাউজ আছে। তাই প্রিয়জনকে নিয়ে ক্যান্ডেল লাইট ডিনার করতে পারবেন। এছাড়া সময় কাটানোর জন্য সুইমিং পুল, স্পা সেন্টার ও পুল বার পাবেন। কর্পোরেট ট্যুরে গেলে এখানকার লাউঞ্জে বড় অনুষ্ঠান করা যায়।
ইন্দোনেশিয়া ভ্রমণ ভিসা করতে কি কি প্রয়োজন?
ই-ভিসা বা স্টিকার ভিসা থাকলে যেকোনো দেশ থেকে সহজে বালিসহ অন্যান্য জায়গা ঘুরে আসতে পারবেন। অল্প কিছু ডকুমেন্ট সাবমিট করে শেয়ারট্রিপের মাধ্যমেই ভিসা অ্যাপ্লিকেশন করা যায়। চলুন জেনে নিই চাকুরিজীবি ও ব্যাবসায়ীদের ভিসা প্রসেসিং সম্পূর্ণ করতে কি কি কাগজপত্র দরকার হবেঃ
চাকুরীজীবিদের স্টিকার ভিসা করতে যা যা লাগবে
- তিন মাসের মধ্যে তোলা ২ কপি ছবি (৪*৬ সেমি)
- পুরনো পাসপোর্টসহ ৭ মাসের মেয়াদসহ পাসপোর্ট
- নো অবজেকশন সার্টিফিকেট (এন.ও.সি)
- অফিসের আইডি কার্ডের কপি (১টি)
- ব্যক্তিগত ব্যাংক সলভেন্সি সার্টিফিকেট
- ২০০০ ডলার ব্যালেন্সসহ ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- হোটেল রিজার্ভেশন
- ভিজিটিং কার্ড
- করোনা টিকার সনদপত্র
ব্যাবসায়ীদের স্টিকার ভিসা করতে যা যা লাগবে
- তিন মাসের মধ্যে তোলা ২ কপি ছবি (৪*৬ সেমি)
- পুরনো পাসপোর্টসহ ৭ মাসের মেয়াদসহ পাসপোর্ট
- নোটারি পাবলিকসহ ট্রেড লাইসেন্সের কপি
- ব্যক্তিগত ব্যাংক সলভেন্সি সার্টিফিকেট
- ২০০০ ডলার ব্যালেন্সসহ ব্যাংক স্টেটমেন্ট
- হোটেলের রিজার্ভেশনের কপি/স্লিপ
- ব্যাবসায়ীক ভিজিটিং কার্ড
- করোনা টিকার সনদপত্র
শেয়ারট্রিপের সাথে আপনার বালি ভ্রমণ হবে আরও সুন্দর!
এই ছিল আমাদের বালি ভ্রমণের পরিকল্পনা, হোটেল ও ফ্লাইটসহ যাবতীয় তথ্য। এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরে বালির আবহাওয়া সবচেয়ে সুন্দর থাকে। আর বৃষ্টি এড়াতে চাইলে অক্টোবর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে যেতে পারেন। কোনো বিশেষ সুবিধা নিয়ে যেতে চাইলে ইমেইল করুন vacation@sharetrip.net -এ এবং কল করুন +8809617617617 নম্বরে।