আমাদের এই ব্লগে জানতে পারবেন এশিয়ার টপ-৫টি ট্রাভেল ডেস্টিনেশান যেখানে আপনি আপনার পরিবার আর বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যেতে পারবেন।
অনেকের কাছেই বিদেশ ভ্রমণ বেশ আনন্দদায়ক। একটি নতুন দেশ ভ্রমণের মাধ্যমে আমরা পাই সেই দেশের ঐতিহ্য, সংস্কৃতি এবং খাবার বিষয়ে নতুন কিছু অভিজ্ঞতা। কোভিড-১৯ মহামারীর কারনে অনেকেই বিগত বছরগুলোতে বিদেশ ভ্রমণে যেতে পারিনি। বর্তমানে কোভিড-১৯ এর প্রকট কমতে থাকায় বিশ্বের অনেক দেশই ট্যুরিষ্টদের জন্য তাদের ট্রাভেল রেস্ট্রিকশান শিথিল করেছে। এই সুযোগে রৌদ্রোজ্জ্বল সমুদ্র সৈকত, ঐতিহাসিক স্থাপত্য মন্দির, কিংবা পাহাড় ট্রেকিং কে কেন্দ্র করে সাজিয়ে নিতে পারেন আপনার নেক্সট ট্রাভেল ডেস্টিনেশান।
কিন্ত কোন দেশ ঘুরতে যাবো কিংবা কি কি উপভোগ করব, এ নিয়ে আমরা অনেক কনফিউজড থাকি। এই কারণে আমরা আজকের ব্লগে এশিয়ার এমন ৫টি দেশ নিয়ে আলোচনা করবো যেখানে আপনার ফ্রেন্ডস আর ফ্যামিলি নিয়ে ট্রাভেল প্ল্যান করতে পারেন।
.........
মালদ্বীপ.
>>>>>
অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি হলো মালদ্বীপ। এটি অসংখ্য দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত। মালদ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিবছর লখ্যাধিক পর্যটক এই দেশটি ভ্রমণ করেন। ২০২১ সালে প্রায় ১৩ লক্ষ পর্যটক মালদ্বীপ ভ্রমণ করেছেন যা বিগত কয়েক বছরের তুনলায় সর্বোচ্চ।
মালদ্বীপ একটি ট্রপিকাল কান্ট্রি হওয়ায় সারা বছরই বেশ উষ্ণ এবং রৌদ্রোজ্জ্বল থাকে। তবে আপনি যদি মালদ্বীপের সৌন্দর্য উপভোগ করতে চান তাহলে সবচেয়ে উত্তম সময় হল নভেম্বর থেকে এপ্রিল।
মালদ্বীপের সবচেয়ে বিখ্যাত অঞ্চল হল কাফু যা উত্তর এবং দক্ষিণ অ্যাটলস এর সমন্বয়ে গঠিত। যারা প্রথম বার মালদ্বীপে ভ্রমণ করছেন, তাদের কাছে এই কাফু অঞ্চলটি বেশ দুর্দান্ত মনে হয়। মালদ্বীপের দ্বিতীয় বিখ্যাত অঞ্চল হল আলিফু অ্যাটলস যা বিভিন্ন ওয়াটার এক্টিভিটিস-এর জন্য বিখ্যাত। সেইসাথে আপনি ঘুরে দেখতে পারেন মালদ্বীপের রাজধানী মালে, নিকটবর্তী হুলহুমালে আইল্যান্ড ইত্যাদি।
মালদ্বীপের পপুলার খাবারের মধ্যে অন্যতম হল মাস হুনি (কাটা স্মোকড টুনা), গুলহা, মাশুনি, মাসরোশি (টুনা স্টাফড চাপাতি), গারুধিয়া (মাছের স্যুপ), মাস রিহা (মালদ্বীপের মাছের কারি), বিস কিমিয়া (সামোসা), বশি মাশুনি (কলা ফুলের সালাদ), ফ্রাইড ইয়ামস, সাগু বন্ডিবাই (সাগু পুডিং) ইত্যাদি।
.............
ব্যাংকক, থাইল্যান্ড
............
ভ্রমণপিপাসুদের আরেকটি জনপ্রিয় গন্তব্যস্থান হলো থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংকক। এখানে রয়েছে প্রাচীন মন্দির, সুবিশাল সমুদ্র-সৈকত, এমনকি শীর্ষস্থানীয় শপিংমল যা আপনার থাইল্যান্ড ভ্রমণকে পরিপূর্ণ করার জন্য যথেষ্ট। ২০২১ সালের হিসাব অনুযায়ী সারা বিশ্ব থেকে প্রায় ১০৬,১১৭ জন বিদেশী পর্যটক থাইল্যান্ডে ভ্রমণ করেছেন।
শুরতে আপনি নিকটবর্তী গ্র্যান্ড প্ল্যালেস, টেম্পল অফ দ্যা রিক্লানিং বুদ্ধা, ওয়াট সুথাট ইত্যাদি ঐতিহাসিক স্পটগুলো ঘুরে দেখতে পারেন। সেই সাথে পরিবারসহ প্রাচীন শহর আয়ুথায়ার প্রত্নতাত্ত্বিক ধ্বংসাবশেষ-এ একটি ডে-ট্যুর প্ল্যান করে ঘুরে আসতে পারেন।
সমুদ্র বিলাসের জন্য আপনি চলে যেতে পারেন ব্যাংকক এর নিকটবর্তী পাতায়া সমুদ্র সৈকত কিংবা হুয়া হিন সৈকতে। সমুদ্র বিলাশের পাশাপাশি বিভিন্ন ওয়াটার এক্টিভিটিস যেমন পেরাসেইলিং, জেট-স্কিং, ওয়াটার সার্ফিং, স্কুবা ডাইভিং ইত্যাদিতে অংশগ্রহণ করতে পারেন।
ব্যাংকক এ আসবেন আর শপিং করবেননা তা তো হতেই পারেনা। সেক্ষেত্রে আপনি চলে যেতে পারেন চাতুচাক মার্কেটে যা থাইল্যান্ডের সবচেয়ে বড় মার্কেট। এখানে আপনি বিশাল মূল্যছাড়ে সকল প্রকার অথেন্টিক প্রডাক্ট কিনতে পারবেন। থাইল্যান্ডের আরেকটি বিখ্যাত মার্কেট হল টার্মিনাল-২১ যেখানে আপনি পাবেন বিশ্বের সকল নামি-দামি ব্রান্ড এবং লোকাল ব্র্যান্ড।
পপুলার থাই খাদ্য সমারহের মধ্যে অন্যতম হল টম ইয়াম গোং (মশলাদার চিংড়ি স্যুপ), প্যাড থাই (থাই-স্টাইলের ফ্রাইড নুডলস), থাই ম্যাংগো স্টিকি রাইস, ইয়াম নুয়া (মশলাদার গরুর মাংসের সালাদ), গুয়ে টিও (নুডল স্যুপ), টম খা গাই (নারকেলের স্যুপে চিকেন) ইত্যাদি।
............
ভারত
...........
ঐতিহ্য আর আধুনিকতার সংমিশ্রণে এক বিস্ময়কর দেশ হলো ভারত। বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ হওয়ায় প্রতিবছর অনেক বাংলাদেশি টুরিস্ট ভারতে ঘুরতে যায়। ২০২১ সালে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে প্রায় ৪ লক্ষ বিদেশী পর্যটক ভারত ভ্রমণ করেছেন।
আধ্যাত্মিক এবং সাংস্কৃতিক স্পটগুলো ভ্রমনের ইচ্ছা থাকলে আপনাকে চলে যেতে হবে আগ্রার তাজমহল, অমৃতসরের হরমন্দির সাহেবের দরগা (আগে স্বর্ণ মন্দির নামে পরিচিত ছিল), গোল্ডেন সিটি জয়সলমীর, লাল কেল্লা, নয়াদিল্লি; আগ্রা ফোর্ট ইত্যাদি স্থানে। সেই সাথে আপনি ঘুরতে যেতে পারেন কাশ্মীর, যা সৌন্দর্যের লীলাভূমির ভূস্বর্গ। এখানে আপনি উপভোগ করতে পারবেন পাহাড়ের চূড়ায় থাকা বরফের মনোরম দৃশ্য।
তাছাড়া আপনি যেতে পারেন মেঘের স্বর্গরাজ্য হিসেবে খ্যাত দার্জেলিং। এখানকার আকাবাকা পাহাড়ি রাস্তা ধরে অথবা ষ্টীম ইঞ্জিনের ট্রেনে যাত্রা করে আপনি পাবেন ওয়ান্স ইন আ লাইফটাইম ট্রাভেল এক্সপেরিয়েন্স। সেই সাথে টাইগার হিল থেকে সুর্যোদয়ের সময় পাবেন মাউন্ট এভারেস্ট এবং কাঞ্চনজঙ্ঘার সুন্দর ভিউ।
বৈচিত্র্যময় আর সুস্বাদু খাবারের জন্য ভারত বেশ জনপ্রিয়। আপনি যদি প্রথমবার ভারতে যান তাহলে এসব খাবার অবশ্যই আপনার খাদ্য তালিকায় ভিন্ন মাত্রার স্বাদ যোগ করবে। ভারতের পপুলার ফুডের মধ্যে অন্যতম হল আলু গোবি, বাটার চিকেন, চানা মসলা, পালক পনির, ডাল মাখানি, কোফতা, মাটান বিরিয়ানি, পাঞ্জাবি থালি, ইডলি ইত্যাদি। তাছাড়া সমগ্র ভারতের স্ট্রিট ফুড বেশ জনপ্রিয় এবং এর মধ্যে অন্যতম হল চাট মাসালা, পাপরি চাট, সামোসা, নুডুলস, ভেল পুরি, ছোলে ভাটুরে, দোসা, জালেবি, গুলাব জামুন ইত্যাদি।
............
কাঠমান্ডু, নেপাল
............
বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য আরেকটি আকর্ষণীয় পর্যটন স্থান হলো নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু। হিমালয় পর্বত দর্শন কিংবা বিভিন্ন পাহাড়-পর্বতে রোমাঞ্চকর ট্রেকিং এক্সপেরিয়েন্স এর জন্য নেপাল একটি পপুলার ট্রাভেল ডেস্টিনেশান।
কাঠমান্ডুর আধ্যাত্মিক এবং ঐতিহাসিক স্থানগুলি পরিদর্শন এর মাধ্যেমে শুরু করতে পারেন আপনার নেপাল ভ্রমণ। এদের মধ্যে অন্যতম হল পশুপথিনা মন্দির, স্বয়ম্ভূনাথ (Swayambhunath) বৌদ্ধমন্দির, বৌদ্ধনাথ স্তুপ, (Boudhanath Stupa) ইত্যাদি। পাশাপাশি আপনি যেতে পারেন চিতওয়ান ন্যাশনাল পার্ক (Chitwan National Park) যেখানে আছে বনজংগলের অসংখ্য বিচিত্রময় প্রাণী।
পরিবারের সাথে ট্রেকিং-এর এক্সপেরিয়েন্স পেতে আপনি চলে যেতে পারেন লেকসাইড শহর পোখরা। পোখরার পাশাপাশি আরো পপুলার ট্রেকিং অঞ্চলগুলো হল এভারেস্ট, অন্নপূর্ণা, এবং ল্যাংটাং।
নেপাল ভ্রমণের অন্যতম আকর্ষণ হল তাদের ঐতিহ্যবাহী খাদ্যসমূহ এবং এদের মধ্যে অন্যতম হল প্রধান খাবার নেপালি ডাল ভাত, নেওয়ারি খাজা, ইয়োমারি, চাটামারী, মো-মো, সেলরোতি ও আলু আচার, পানি পুরি, চাটপাতে, থাকালি খানা, জুজু ধাউ ইত্যাদি।
............
শ্রীলঙ্কা
...........
দক্ষিণ এশিয়ার একটি দ্বীপরাষ্ট্র হলো শ্রীলঙ্কা। এই দেশ তার অনন্য নিদর্শন আর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সমারোহ দিয়ে সমগ্র বিশ্বের টুরিস্টদের আকর্ষণ করে থাকে। পর্যটকদের প্রধান আকর্ষণ থাকে মিনেরিয়া ন্যাশনাল পার্ক যেখানে আপনি খুব কাছ থেকে দেখতে পাবেন শতাধিক হাতি এবিং তাদের জীবনযাত্রা। সেই সাথে আপনি স্বপরিবারে ঘুরে দেখতে পারেন কলম্বোর নতুন লোটাস টাওয়ার।
শ্রীলঙ্কার আউটডোর এক্টিভিটিস-এর মধ্যে সবার প্রধান হল লিওপার্ড স্পটিং। এটি করতে হলে আপনাকে যেতে হবে ইয়ালা ন্যাশনাল পার্ক-এ। সেই সাথে অন্যান্য আউটডোর এক্টিভিটিস-এর মধ্যে অন্যতম হল রাতের বেলায় পিল্গ্রিমেজ ট্রেলে হাইকিং, সকালে অ্যাডামস পিকে সূর্যোদয় দেখা ইত্যাদি।
তবে শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা পেতে হলে আপনাকে ট্রেনে করে ক্যান্ডি থেকে এলা যাত্রা করতে হবে। এই ট্রেন-ভ্রমণের সময় আপনি দেখতে পারবেন শ্রীলঙ্কার অদেখা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য।
জনপ্রিয় শ্রীলঙ্কান খাবারের মধ্যে অন্যতম হল আম্বুল থিয়াল, সওর ফিশ কারি, কাজু মালুয়া, ক্যাশিও কারি, শ্রীলঙ্কা ক্র্যাব কারি, এলাভালু রুটি, আপ্পা ইত্যাদি।
............
বিদেশ ভ্রমণ করুন শেয়ারট্রিপ-এর সাথে
............
আপনি কি উপরে উল্লিখিত টুরিস্ট ডেস্টিনেশানগুলি ভ্রমণে আগ্রহী? তাহলে আপনার শিডিউল ফিক্স করে খুব সহজেই ট্যুর প্ল্যান করুন শেয়ারট্রিপ-এর সাথে। শেয়ারট্রিপ-এ আপনি পাবেন ঢাকা থেকে মালদ্বীপ, ঢাকা থেকে ব্যাংকক ইত্যাদি রুটের সর্বনিম্ন ফ্লাইট ফেয়ার। যেহেতু টিকেটের মূল্য ক্রমান্বয়ে পরিবর্তিত হতে থাকে, তাই আপনি ডেস্টিনেশান সিলেক্ট করার সাথে সাথেই টিকেট বুক করে ফেলুন। এছাড়াও, আপনার বাজেট এবং প্রয়োজনের উপর ভিত্তি করে তৈরি করে নিতে পারেন এক্সক্লুসিভ প্যাকেজ ডিলস। আরো জানতে ভিজিট করুন www.sharetrip.net অথবা ডাউনলোড করুন শেয়ারট্রিপ মোবাইল অ্যাপ। এছাড়াও, যেকোন তথ্য জানতে ইমেইল করুন vacation@sharetrip.net এ অথবা সরাসরি কল করুন +8809617617617 নাম্বারে।