সাধ ও সাধ্যের সমন্বয়ে পারফেক্ট ট্রিপের প্রশ্নে ট্রাভেলারদের তালিকার শীর্ষে রয়েছে মালয়েশিয়া। দক্ষিণপূর্ব এশিয়া’র এই দেশটিতে রয়েছে ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং আধুনিকতার এক অনন্য সংযোগ, যা প্রতিনিয়তই ভ্রমণপিয়াসুদেরকে আকর্ষণ করে চলেছে। দিগন্তজোড়া সৈকত, ঘন সবুজ বন-বনানী আর ঐতিহাসিক স্থাপত্যশৈলীর আভিজাত্যের টানে পৃথিবীর নানা প্রান্ত থেকে হাজারো মানুষ পাড়ি জমাচ্ছে ‘মিনি এশিয়া’ খ্যাত এই দেশটিতে। ভ্রমণ, উচ্চশিক্ষা, ব্যাবসায়িক প্রয়োজনের পাশাপাশি আরো অনেক কারণেই মালিয়েশিয়া হতে পারে আপনার ডেস্টিনেশন। তবে মালয়েশিয়া-তে একটি পারফেক্ট ট্রিপের জন্য আপনাকে জানতে হবে সেখানকার স্পটগুলো সম্পর্কে।
আপনার মালয়েশিয়া ট্রিপকে আরো সুন্দর করতে টপ ৭টি স্পট সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে থাকছে আমাদের আজকের এই ব্লগটি।
পেট্রোনাস টাওয়ার
মালয়েশিয়া-র রাজধানী কুয়ালালামপুর-এ অবস্থিত একটি আইকনিক স্ট্রাকচার হলো পেরট্রোনাস টাওয়ার, যা পেট্রোনাস টুইন টাওয়ার (Petronas Twin Tower) নামে বেশি পরিচিত। উচ্চতা ও আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে এটি দীর্ঘদিন ছিল পৃথিবীর উচ্চতম দালানের তালিকায় শীর্ষে। ৮৮ তলাবিশিষ্ট স্মার্ট এই মিনারটির রয়েছে প্রায় ১৪৮৩ ফুট উচ্চতা, যা পর্যটকদের তাক লাগিয়ে দিচ্ছে নিমিষেই।
শুধু উচ্চতাই নয়, নির্মাণশৈলীতেও এই দালানটির রয়েছে বিশেষ কদর। দর্শকদের সময়টুকুকে বর্ণিল করে তুলতে এই টাওয়ারে রয়েছে একটি অবজারভেশন ডেক, স্কাইব্রিজ এবং একটি গিফট শপ। টাওয়ারের ৮৬ তলায় অবস্থিত অবজারভেশন ডেক থেকে পেয়ে যাবেন কুয়ালালামপুর সিটির এক প্যানারোমিক ভিউ। দুটি আকাশচুম্বী দালানের মাঝখানে হেঁটে চলার মতো রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা পেতে আপনাকে চলে যেতে হবে স্কাইব্রিজ-এ। এছাড়াও, এখানে রয়েছে একটি কনসার্ট হল, যেখানে গেলে সুরের মূর্ছনায় হারিয়ে যাবে যে-কেউ।
প্রযুক্তিগত উন্নয়নের আশীর্বাদে মালয়েশিয়া’র যেকোনো প্রান্তে যাতায়াত করা এখন খুবই সহজ। কুয়ালালামপুর এয়ারপোর্ট থেকে ৪৫ কিমি (প্রায়) দূরে অবস্থিত পেট্রোনাস টাওয়ার-এ যাওয়ার জন্য রয়েছে অনেক ধরনের ট্রান্সপোর্ট, এরমধ্যে বহুল ব্যবহৃত হলো গাড়ি, বাস ও ট্রেন। কুয়ালালামপু-এর যেকোনো স্থান থেকেই এই ট্রান্সপোর্টগুলোতে করে পৌঁছে যেতে পারেন পেট্রোনাস টাওয়ার। কিছুটা আরামদায়ক ভ্রমণের জন্য নিয়ে নিতে পারেন প্রাইভেট কার, সেক্ষত্রে সময় লাগবে এক থেকে দেড় ঘন্টার মতো। তবে অপেক্ষাকৃত কম সময়ে পৌঁছানোর জন্য যেতে পারেন ট্রেনে,কুয়ালামপুর এয়ারপোর্ট থেকে ট্রেনে চেপে মাত্র ৫০ মিনিটেই পৌঁছে যাবেন পেট্রোনাস টাওয়ার। ট্রেনটি KL Sentral এবং Klcc হয়ে নিয়ে যাবে ডেস্টিনেশনে। এছাড়াও রয়েছে কয়েক ধরণের বাস, যেগুলো খুব সাশ্রয়ী।
পেট্রোনাস টাওয়ার ভ্রমণের জন্য রয়েছে নানা রেঞ্জের টিকিট, যেগুলোর মূল্য থাকছে ৮ ডলার ( ৩৩ রিঙ্গিত) থেকে ২০ ডলার ( ৮০ রিঙ্গিত) পর্যন্ত। তবে ২ বছর কিংবা এর কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে প্রবেশমূল্য ফ্রি। জনপ্রতি ২৭৫ ডলার খরচ করলেই আপনি পেতে পারেন পেট্রোনাস টাওয়ার-এর গাইডেড ট্যুর, যেখানে একজন দক্ষ নির্দেশক থাকবেন আপনাকে গাইড করতে।
গুনং মুলু ন্যাশনাল পার্ক
প্রতিদিনের যান্ত্রিক জীবন থেকে কিছু সময়ের অবসর নিতে ঘুরে আসতে পারেন গুনং মুলু উদ্যান-এ। মালয়েশিয়ার সারাওয়াক স্টেট-এ অবস্থিত সবুজঘেরা এই রেইনফরেস্টে রয়েছে মালয়েশিয়া’র আকর্ষণীয় গুহাসমূহ (cave) এবং গাছপালা ও পশুপাখির অভয়ারণ্য। প্রায় ৫৩,০০০ হেক্টর জুড়ে বিরাজমান এই পার্কটিতে রয়েছে ৩,৫০০ এর বেশি জীববৈচিত্র্য, সব মিলিয়ে এটি জায়গা করে নিয়েছে ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট এবং পর্যটকদের পছন্দের তালিকায়।
গুনং মুলু উদ্যান-এর মূল আকর্ষণ হলো এখানকার গুহা বা কেভ, প্রত্যেকটি কেভ-এর রয়েছে ইউনিক সব ফিচার। এর মধ্যে জনপ্রিয় কেভ-এর তালিকায় আছে ডিয়ার কেভ , ক্লিয়ার ওয়াটার বা উইন্ড শো কেভ ইত্যাদি। আপনার ভ্রমণে কিছুটা স্পাইস যোগ করতে রয়েছে মুলু সামিট ট্রেক, যেখানে পেতে পারেন রোমাঞ্চকর হাইকিং-এর স্বাদ, তবে তার আগে ফিটনেস ও নির্দেশাবলী অবশ্যই দেখে নিতে হবে। উদ্যানটিতে আরো রয়েছে মুলু স্কাইওয়াক, যা প্রায় ১৬০০ ফুট দীর্ঘ একটি ঝুলন্ত সিঁড়ি। অনন্য এই সিঁড়ি-তে চড়তেই আপনার নজর কাড়বে শান্ত নদী আর সবুজের এক অতুলনীয় দৃশ্য।সবচেয়ে সহজে এবং দ্রুততম সময়ে কুয়ালালামপুর থেকে মুলু পৌঁছাতে রয়েছে ফ্লাইট। ডোমেস্টিক এই ফ্লাইটগুলোতে মুলু যেতে গড়ে সময় লাগবে চার ঘন্টার মতো, তবে ট্রানজিট অনুযায়ী তা কমবেশি হতে পারে। কিছুটা সাশ্রয়ী মূল্যে মুলু যেতে পারেন বাসে চড়ে, তবে সেক্ষত্রে আপনার সময় লাগবে পুরো একদিনেরও বেশি। এসব স্পট থেকে গুনং মুলু উদ্যান পৌঁছাতে বেছে নিতে পারেন যেকোনো প্রাইভেট ট্রান্সপোর্ট অথবা পাবলিক যানবাহন। সারাওয়াক অঞ্চলে পৌঁছানোর পর আপনাকে আগমন এবং বহির্গমন কার্ড (Arrival/Departure Card)পূরণ করে নিতে হবে। এই কার্ডটি যেকোন এন্ট্রি পয়েন্টে, বিদেশে মালয়েশিয়ার প্রতিনিধি অফিসে বা ট্রাভেল এজেন্সিতে সহজেই পেয়ে যাবেন। গুনং মুলু ন্যাশনাল পার্ক ঘুরে দেখতে রয়েছে নানা ধরনের প্যাকেজ। সেই সাথে থাকছে কিছুটা কাস্টমাইজেশনের সুযোগ। ৯৫ ডলার (৪২০ রিঙ্গিত) থেকে শুরু করে নানা রেঞ্জের প্যাকেজ বেছে নিয়ে উপভোগ করে আসতে পারেন সবুজের মায়াঘেরা সান্নিধ্য।
লংকাওয়ে
নয়নাভিরাম দ্বীপপুঞ্জ আর দীগন্তজোড়া সৈকতের অপার্থিব রূপ উপভোগ করতে লংকাওয়ে’র জুড়ি মেলা ভার। একটি বা দুটি নয়, পুরো ৯৯টি দ্বীপপুঞ্জ নিয়ে সগর্বে বিদ্যমান এই স্পটটি নিঃস্নদেহে প্রকৃতিপ্রেমীদের জন্য এক স্বর্গভূমি।
লংকাওয়ে-তে সাগর-পাহাড়ের মিতালীর পাশাপাশি পর্যটকদের জন্য রয়েছে প্যারাসেইলিং, ডাইভিং, কায়াকিং কিংবা স্নোরকেলিং এর মতো এক্সাইটিং সব আউটডোর অ্যাক্টিভিটির সুযোগ। তবে ফুরফুরে হাওয়ায় গুনগুনিয়ে যদি কয়েক মুহূর্ত হেঁটে নিতে চান, তাহলে বেছে নিতে পারেন লংকাওয়ে স্কাইব্রিজ-কে, আর বসে বসে প্রায় শুণ্যে ভেসে বেড়ানোর জন্য থাকছে লংকাওয়ে কেবল কার। তবে উচ্চতাভীতি বা অ্যাক্রোফোবিয়া থাকলে অবশ্যই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।সমুদ্রের তীরে বসে প্রিয়জনের সাথে কিছুটা শান্ত সময় কাটানো অনেকেরই পছন্দ, আর সেই প্রশ্নে লংকাওয়ে’র আইল্যান্ডগুলোর কথা না বললেই নয়। চেনাং, তানজুং রহু (Tanjung Rhu) কিংবা পানতাই তেনগাহ- যেকোনোটিই হতে পারে অবসর যাপনের জন্য পারফেক্ট স্পট।লংকাওয়ে-তে দেখতে পাবেন অভিনব ব্ল্যাক স্যান্ড বীচ, যেটি আপনার অভিজ্ঞতার ঝুলিতে যোগ করবে এক ভিন্ন মাত্রা। এছাড়াও ঈগল স্কয়ার-এ একটি সেলফি তুলে বন্ধুমহলে চাইলেই তাক লাগিয়ে দিতে পারেন ! সবমিলিয়ে লংকাওয়ে হয়ে উঠেছে পৃথিবীময় এক দুর্নিবার গেটওয়ে।কুয়ালালামপুর থেকে লংকাওয়ে যাওয়ার দ্রুততম উপায় হচ্ছে ফ্লাইট, যেকোনো ফ্লাইটে আপনার সময় লাগবে মাত্র ঘন্টা দুয়েকের মতো। এছাড়া রয়েছে ট্রেন; কিছুটা সময় বেশি লাগলেও ট্রেন জার্নি অনেকের কাছেই বেশ আরামদায়ক। কুয়ালালামপুর থেকে বাসে চেপে কিছুটা কম খরচে লংকাওয়ে যেতে পারেন; সেক্ষত্রে সময় লাগবে অনেকটাই বেশি এবং স্বস্তির মাত্রাও কিছুটা কমে আসবে।
ক্যামেরন হাইল্যান্ডস
মেঘের চাদরে ঢাকা ফুলেল ভূমি দেখতে চাইলে পাড়ি জমাতে হবে ক্যামেরন হাইল্যান্ডস-এর পথে। সুসজ্জিত স্ট্রবেরি বাগান, বেগুনরঙ্গা ল্যাভেন্ডার পার্ক, চোখজুড়ানো চাগাছের সারিসহ দর্শকদের মন মাতাতে এই অঞ্চলে রয়েছে আরো অনেক আয়োজন । মালয়েশিয়া’র পর্যটকবহুল পাহাং রাজ্যে অবস্থিত এই স্পটটি উপভোগ করতে পারেন বছরের যেকোনো সময়ে, তবে নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারি’র মধ্যে ভ্রমণ করে লুফে নিতে পারেন এর পরিপূর্ণ রূপ। কেননা এই সময়ে গাছে গাছে বসে ফুলের মেলা, যার মিষ্টি সুবাস আপনার ঠোঁটের কোণে অজান্তেই এনে দিবে এক টুকরো হাসি।
প্রকৃতির লীলা অবলোকনের পাশাপাশি যদি কৃষ্টি-কালচারের দিকে কিছুটা নজর দিতে চান, তবে টাইম টানেল রয়েছে আপনারই প্রতীক্ষায়। প্রাচীন মালয়জীবনের নানা দুর্লভ জিনিসপত্র আর তথ্য নিয়ে সাজানো এই মিউজিয়ামে ঢুকলে কিছুটা নস্টালজিক হয়ে পড়তেই পারেন। এছাড়াও নাইট মার্কেট-এর সাজসজ্জায় শপিং ও ডিনার করে প্রিয়জনের সাথে কাটাতে পারেন অসাধারণ কিছু মুহূর্ত। সকল আয়োজনেই আপনাকে বিনোদিত করবে ক্যামেরন হাইল্যান্ডস্ত
জর্জ টাউন
জর্জ টাউন, মালয়েশিয়া’র এমন একটি শহর, যেখানে ঐতিহ্য এবং আধুনিকতার এক অনন্য মিশেল ভ্রমণপ্রেমীদের বিমোহিত করে তোলে। বিশেষত, আপনি যদি হয়ে থাকেন একজন ইতিহাসপ্রেমী কিংবা ফটোগ্রাফার, তবে জর্জ টাউন অবশ্যই আপনার ভ্রমণ তালিকায় স্থান পাওয়ার দাবিদার।
ইতিহাসবহুল বর্ণিল স্থাপত্যের লিস্টে ব্লু ম্যানশন (The Cheong Fatt Tze Mansion ) এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। চাইনিজ ধাঁচে তৈরী এই দালানটির ইন্ডিগো নীল রঙ আপনাকে মুগ্ধ করবেই, আর এজন্যই এটি অর্জন করেছে বিশ্বব্যাপী স্বীকৃতি (UNESCO 'Most Excellent' Heritage Conservation Award)। আর্ট এবং পেইন্টিং এ আগ্রহ থাকলে ঢুঁ মেরে আসতে পারেন বাটিক মিউজিয়াম থেকে; এখানে দেখতে পাবেন এমন কিছু চিত্রকর্ম যা অন্য কোথাও পাওয়া দুষ্কর। পেনাং শহরটিকে এক লহমায় নজরবন্দি করতে চাইলে চলে যেতে হবে রেইনবো স্কাইওয়াক-এ। সী লেভেল থেকে ৮১৬ ফুট উঁচুতে বসে কালারফুল পেনাং সিটি দেখার কি অনুভূতি কতটা থ্রিলং হতে পারে, তা খুব সহজেই কল্পনা করা যায়। টাওয়ারটির টপ ফ্লোরে যেতে লাগবে টিকিট, যার মূল্য থাকছে ২০ থেকে ৬০ ডলারের মতো।ভোজনরসিকদের জন্য জর্জ টাউন যেন রত্নাকর, কেননা এখানে রয়েছে ওয়ান্ডারফুড মিউজিয়াম-এর মতো ফুড হল। প্রাচীন ও আধুনিক সব ধরণের মালয়েশিয়ান কুইজিনের সমারোহ যেন নিরন্তর আকৃষ্ট করে চলেছে ফুডলাভারদের। আর সেজন্যই এটি মালয়েশিয়া’র ফুড ক্যাপিটাল হিসেবে বেশ জনপ্রিয়। জর্জ টাউন-এর প্রত্যেকটি ইমারত ও অলিগলিজুড়ে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন শিল্পের ছোঁয়া, ফলে এটিকে পেনাং দ্বীপ-এর মাল্টিকালচারাল ক্যাপিটাল বললেও ভুল হবে না। খানিকটা ইউরো-এশীয় ধাঁচে গড়ে ওঠা এই অঞ্চলটি তাই লিপিবদ্ধ হয় ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট হিসেবে।সবকিছু বিবেচনা করলে মালয়েশিয়া ট্রিপ-এ একটি স্লট জর্জ টাউন-এ কাটাতেই পারেন।কুয়ালাম্পুর থেকে জর্জ টাউন যেতে পারেন অনেকভাবেই। প্লেন, বাস, ট্রেন, ট্যাক্সি-সবকিছুই রয়েছে পর্যাপ্ত সংখ্যায়। তবে ভ্রমণের স্বাচ্ছন্দ্য আর সময়ের কথা চিন্তা করলে ফ্লাইট অবশ্যই প্রাধান্য পাবে, কেননা আকাশপথে মাত্র ৪ ঘন্টার মতো জার্নি করলেই পৌঁছে যাবেন গন্তব্যে। আর সাশ্রয়ী ভ্রমণের জন্য রয়েছে বাস। চাইলে ড্রাইভ করেও জর্জ টাউন যেতে পারেন, সেক্ষেত্রে সময়টা কমবেশি হতে পারে।
পারহেনশিয়ান আইল্যান্ডস
যেকোনো ট্রিপে কিছুটা কোয়ালিটিফুল ‘মি টাইম’ কাটাতে কিংবা প্রিয়মানুষের সাথে দু’দন্ড অবসর যাপনের জন্য ট্রাভেলারদের প্রথম পছন্দ আইল্যান্ড। মালয়েশিয়া ট্রিপ-এ ঠিক এমনই কিছু প্রাণজুড়ানো মুহূর্ত কাটাতে চলে আসুন পারহেনশিয়ান আইল্যান্ডস-এ। নয়নাভিরাম দৃশ্যের এর পাশাপাশি এই দ্বীপটির পপুলারিটি রয়েছে স্নোরকেলিং, ট্রেকিং, সী কায়াকিং, সুইমিং উইথ ফিশ -এর মতো এক্সাইটিং সব আউটডোর অ্যাক্টিভিটির জন্য। সমুদ্রে স্বচ্ছ জলধারায় ভাসতে ভাসতে হয়তো দেখতে পাবেন কচ্ছপ কিংবা রং-বেরঙের মাছ, সবমিলিয়ে যেন এক এক্সটিক অনুভূতি !
দর্শকদের আনন্দে কিছুটা ভিন্নমাত্রা জোগ করতে পারহেনশিয়ান আইল্যান্ডস-এ রয়েছে ফায়ার শো, যা পর্যটকরা খুব পছন্দ করেন। মূলত স্থানীয়রা তাদের অতিথিদের জন্য এই ফায়ার ডান্স করে থাকে। পারহেনশিয়ান ভিজিট-কে আরো স্মরণীয় করতে চাইলে আপনিও যোগ দিতে পারেন নৃত্যশিল্পীদের সাথে।মূলত প্লেনে এবং বাসে করে যেতে পারবেন পারহেনশিয়ান আইল্যান্ডস। অধিকাংশ ট্রাভেলার এক্ষেত্রে ফ্লাইটকেই বেছে নেয়। তবে কুয়ালালামপুর থেকে পারহেনশিয়ান আইল্যান্ডস-এর সরাসরি কোনো ফ্লাইট নেই, আপনাকে কোথা বারু কিংবা কুয়ালা তেরেঙ্গানু-তে নামতে হবে। সেক্ষেত্রে ৩.৫ থেকে ৪ ঘন্টার মতো সময় লাগবে, আর বাসে গেলে লাগবে প্রায় ৯ ঘন্টার কাছাকাছি। এরপর জাহাজে করে পৌঁছে যেতে পারেন আইল্যান্ড-এ। খরচ কিছুটা কম করতে চাইলে বাস এবং ফেরীর সমন্বয়ে পৌঁছাতে পারেন আপনার ডেস্টিনেশনে, এক্ষেত্রে সময় সম্পর্কে আপনাকে বেশ সচেতন থাকতে হবে।
মালাক্কা
মালয়েশিয়া’র ঐতিহ্য, সংস্কৃতি আর সৌন্দর্যবোধের এক জীবন্ত পটভূমি এই মালাক্কা শহর। স্থাপত্যকলা কিংবা প্রাচীন নিদর্শন- সব মাপকাঠিতেই এই অঞ্চলের স্থান প্রথম সারিতে। বন্দরনগরী হওয়ায় মালাক্কা সিটি’র ওয়াটারফ্রন্ট বরাবরই দর্শনার্থীদের কাছে জনপ্রিয়। ফটোগ্রাফারদের কাছে এই স্পটটি একটি বিশেষ আকর্ষণ, কেননা ছবি তোলার জন্য এত পারফেক্ট প্লেস খুব কমই পাওয়া যায়।
মালাক্কার আররেকটি দেখার মতো প্লেস হলো ঘূর্ণায়মান অবজারবেশন টাওয়ার। প্রায় ৩৫০ ফুট উঁচু এই টাওয়ার থেকে পুরো মালাক্কা শহর-এর প্যানেরমিক ভিউ উপভোগ করতে লাগবে মাত্র ৭ মিনিট. প্রাচীন যুগে ফিরে যেতে চাইলে রয়েছে সুলতানেট প্যালেস, বাবা নোয়া হেরিটেজ পার্ক, মালাক্কা ডাচ স্কোয়ার এর মতো অনন্য সব নিদর্শন।শিশুদের বিনোদনের জন্য রয়েছে আ'ফামোসা পার্ক ও মালাক্কা ওয়ান্ডারল্যান্ড থিম পার্ক। খুব কাছ থেকে পরিচিত নানা জীবজন্তু দেখে বেশ মজার সময় কাটাতে আপনার সন্তানকে নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন এই স্পটগুলো থেকে।কুয়ালামপুর থেকে মালাক্কা’র দূরত্ব ১২২ কিলোমিটারের মতো, আর এই পথ পাড়ি দিতে রয়েছে প্রাইভেট কার, ট্রেন, ট্যাক্সি, বাস ইত্যাদি। মালাক্কা সিটি-তে পৌঁছাতে গড়ে সময় লাগবে ২ থেকে ৩ ঘন্টা, আর যানবাহনভেদে খরচও কিছুটা কমবেশি হবে।
ঢাকা থেকে মালয়েশিয়া যাবেন কীভাবে
ঢাকা থেকে মালয়েশিয়া’র অনেক গুলো ফ্লাইট রয়েছে, এরমধ্যে সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্স, থাই এয়ারওয়েজ, ইউ এস বাংলা, এমিরেটস,মালিন্দো এয়ার ইত্যাদি ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। এগুলোর যেকোনোটিতে করে সরাসরি কুয়ালালামপুর পোঁছে যেতে পারেন। কুয়ালালামপুর ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট (KLIA) থেকে কুয়ালালামপুর মেইন সিটি কিছুটা দুরে, তাই এয়ারপোর্ট থেকে আপনাকে নিতে হবে ট্যাক্সি কিংবা বাস। দুটোই বেশ এভেইল্যাবল, তবে বাসে ভ্রমণ করতে হলে আগে থেকে শিডিউল দেখে নেওয়া ভালো। কুয়ালালামপুর থেকে পাবলিক কিংবা প্রাইভেট ট্রান্সপোর্টে সহজেই পৌঁছাতে পারবেন যেকোনো ডেস্টিনেশনে। কোন ট্রান্সপোর্টটি নিবেন তা পুরোটাই নির্ভর করে আপনার সময়, খরচ ইত্যাদির উপর।
মালয়েশিয়া ট্রিপ প্ল্যান করুন শেয়ারট্রিপ-এর সাথে !
মালয়েশিয়া ট্রিপ-এর সবধরণের পরিকল্পনা এবং প্রসেসিং সহায়তা দিতে আপনার সাথে আছে শেয়ারট্রিপ। দেশের সর্বপ্রথম ট্রাভেল এগ্রিগেটর শেয়ারট্রিপ আপনাকে দিচ্ছে ঢাকা-কুয়ালালামপুর-ঢাকা বেস্ট ফ্লাইট রেট। সেই সাথে শেয়ারট্রিপ-এ পাচ্ছেন টপনচ হোটেলগুলোর অভাবনীয় অফার। শুধু তাই নয়, এখানে। রয়েছে এক্সাইটিং হলিডে প্যাকেজ, যেখানে থাকছে আপনার মন মতো কাস্টমাইজেশনের সুযোগ।মালয়েশিয়া ভিসা সংক্রান্ত সকল গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পড়ে ফেলুন শেয়ারট্রিপ-এর মালয়েশিয়া ভিসা গাইড। যেকোনো ডিটেইলের জন্য ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট www.sharetrip.net এবং ডাউনলোড করুন শেয়ারট্রিপ অ্যাপ। ট্রাভেল সংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের জন্য মেইল করুন vacation@sharetrip.net ঠিকানায় অথবা কল করুন আমাদের হটলাইন নাম্বার +৮৮-০৯৬১৭৬১৭৬১৭।