সমুদ্রের উত্তাল জলরাশি, সাথে পাহাড়ের অপূর্ব দৃশ্য–নীলসবুজে আঁকা নৈসর্গিক এই ছবির সাথে সবচেয়ে বেশি কানেক্টেড প্লেসটি হলো কক্সবাজার। বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এই জেলাটির জনপ্রিয়তা রয়েছে অনেকগুলো কারণে। এর প্রধাণ কারণ হলো, কক্সবাজারে রয়েছে পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্র সৈকত। শুধু তাই নয়, কক্সবাজারে আপনি পাবেন পাহাড় ও সমুদ্র একসাথে দেখার এক অনন্য অভিজ্ঞতা। এখানে আছে শপিং, প্যারাসেইলিং, কায়াকিং-এর মতো থ্রিলিং কিছু অ্যাক্টিভিটির সুযোগ। অনেকগুলো অ্যাক্টিভিটির মধ্যে ঠিক কোন অপশনটি আপনার জন্য পারফেক্ট হবে- তা জানাতে রয়েছে এই ব্লগটি।
তাই, আপনার সুবিধার্থে এই ব্লগে আপনার জন্য রয়েছে মাস্ট-ট্রাই অ্যাক্টিভিটির একটি লিস্ট। এখান থেকে নিজের বাজেট, সময় ও প্রায়োরিটির ভিত্তিতে সিলেক্ট করে নিন আপনার উপযুক্ত অ্যাক্টিভিটিগুলো আর আপনার কক্সবাজার ট্রিপকে করে তুলুন আরো বেশি উপভোগ্য।
কখন যাবেন কক্সবাজার?
কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতটি প্রায় পুরো বছরজুড়েই পর্যটক ও দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত থাকে। সেই অর্থে, বছরের যেকোনো সময়ে ঘুরে আসতে পারেন সেখান থেকে। তবে সমুদ্র শান্ত থাকায় এবং আবহাওয়া কিছুটা ঠান্ডা থাকায় শীতকালে, অর্থাৎ নভেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে এখানে ভিজিটর বেশি আসে। তবে, বছরের যেকোনো সময়েই ঘুরে আসতে পারেন কক্সবাজার থেকে। কেননা প্রকৃতি একেক মৌসুমে একরূপে সাজিয়ে তোলে এই সৈকতকে। কখনও ঝুম বর্ষায় ঝাউবনে বৃষ্টিস্নান, কখনও ঢেউয়ের তালে তালে হারিয়ে যাওয়া, কখনও বা নিঝঝুম নিরালায় বসে দুদণ্ড সময় কাটানো- সবকিছুরই দেখা মিলবে কক্সবাজারে। তবে, খেয়াল রাখতে হবে, সিজন অনুযায়ী রিসোর্টের রেট, ফ্লাইট রেট সহ আনুষাঙ্গিক যেকোনো খরচে পরিবর্তন আসতে পারে।
কক্সবাজার ট্রিপ-এর অ্যাক্টিভিটিজ
শুধু্মাত্র ন্যাচারাল বিউটি-ই নয়, ট্রাভেলারদের জন্য কক্সবাজারে রয়েছে অনেক রকমের আউটডোর অ্যাক্টিভিটির অপশন। ডাইন্যামিক এই প্লেসে বেড়াতে এসে তাই একঘেয়েমির কোন সুযোগ নেই। প্রকৃতি যেন তার মহিমা উপস্থাপনে কোনো ত্রুটি রাখে নি এখানে। কক্সবাজার-এ কি কি অ্যাক্টিভিটি এভেইল করা যায়, সেটার কম-বেশি ধারণা সবারই আছে, তবে কোন প্ল্যানটি আসলে এপ্রোপ্রিয়েট, কিংবা কোন ভিউয়ের জন্য এক্স্যাক্টলি কোথায় যেতে হবে- তা নিয়ে একটু কনফিউশন কিন্তু থেকেই যায়। তাই কক্সবাজার ভিজিটের এক্সাইটিং কিছু অ্যাক্টিভিটি এখানে দেওয়া হলো, যেন আপনার ট্রিপটি আরো গোছানো ও সুন্দর হয়।
সাইট সিয়িং (Sightseeing)
নিঃসন্দেহে কক্সবাজার ভ্রমণের মেইন উদ্দেশ্যই সাইটসিয়িং, এবং তা হওয়া বেশ যৌক্তিক। কেননা, দৃষ্টিজোড়া এমন বিস্তীর্ণ জলরাশি এবং সূর্যাস্তের অদম্য টান পৃথিবীময় অতুলনীয়। এখানে সূর্যাস্ত এতটাই মায়াবী, যে সেটির আকর্ষণ এড়ানো প্রায় অসম্ভব । সেজন্য কক্সবাজারে সাইটসিয়িং-এর ক্ষেত্রে বিচ-কেই প্রাধান্য দেওয়া হয়। এখানে আগত ভ্রমণকারীদেরদের মধ্যে হিমছড়ি, সুগন্ধা, লাবনী এবং ইনানী বিচ-এর পপুলারিটিই বেশি।
লাবনী ও সুগন্ধা কক্সবাজারের দুটি ব্যস্ত সৈকত, প্রায় সারাক্ষণই পর্যটকদের প্রাণচাঞ্চল্যে মুখোর হয়ে থাকে। সপরিবারে সমুদ্রের স্বাদ নিতে অনেকেই বেছে নেন এই দু’টির একটি বিচ-কে। সুগন্ধা পয়েন্টে রয়েছে ঝিনুক মার্কেট এবং শুঁটকি মাছের আড়ৎ। প্রিয়জনের জন্য একটি টোকেন গিফট হিসেবে বেছে নিতে পারেন ঝিনুকের মালা, দুল কিংবা শো-পিস। লাবনী পয়েন্ট থেকে হিমছড়ির দিকে এগোতে থাকলে জেলেদের মাছ ধরার একটি চিরচেনা দৃশ্য আপনার চোখে পড়তে পারে। তাছাড়া, সূর্যাস্তের মোহনীয় দৃশ্য তো থাকছেই। সবমিলিয়ে, কক্সবাজার ট্রিপের যেকোনো এক স্লটে এই বিচ দু’টি অবশ্যই ঘুরে দেখা উচিৎ। সাধারনতঃ হিমছড়ি বিচ-এ 2কোলাহলের মাত্রা কিছুটা কম থাকে। হিমছড়ি বিচ-এ যেতে যেতে আপনার মনে পড়ে যেতে পারে তপু-র সেই গানটি “…একপাশে সাগর এক পাশে বালি…”! তবে শুধু সাগর আর বালি নয়, হিমছড়ি যেতে বোনাস হিসেবে এক পাশে পাবেন পাহাড়ের সবুজ সারি।
ইনানী বিচ-এর কথা একটু আলাদা, কেননা সেন্টমার্টিন ছাড়া শুধু এখানেই পাবেন জীবিত বা মৃত প্রবাল দেখার সুযোগ। চুপটি করে দাঁড়িয়ে সাগরের পাড়ে কয়েক মুহূর্ত কাটানোর জন্য ইনানী বিচ-এর জুড়ি নেই। সমুদ্র এখানে শান্তই থাকে বেশিরভাগ সময়। কোলাহলের বাইরে সূর্যাস্ত উপভোগ করতে অধিকাংশ পর্যটক বিকালেই চলে আসেন এখানে।
একুয়াহোলিক টুরিস্ট ক্যারাভান (Aquaholic Tourist Caravan)
সমুদ্রের ধার ঘেঁষে কিছুটা সময় বাধাহীন ছুটে চলাকে আপনার এক্সপেরিয়েন্সে যোগ করতে আছে পৃথিবীর দীর্ঘতম মেরিন ড্রাইভ। কক্সবাজার থেকে টেকনাফ অব্দি ৮০ কিলিমিটার দীর্ঘ এই মেরিন ড্রাইভটি জনপ্রিয়তা লাভ করেছে ব্যাপকভাবে। আপনি চাইলে নিজস্ব কিংবা ভাড়া করা গাড়িতে করে এটা উপভোগ করতে পারেন। তবে, ভিন্নধর্মী একটা ট্রিপের জন্য আপনার চয়েজ লিস্টে থাকতে পারে Aquaholic Tourist Caravan।
এটি একটি দোতলা টুরিস্ট বাস, যেটির উপরের ছাদটি খোলা। এই বাসে করে মেরিন ড্রাইভ-এর দু’পাশের সৌন্দর্য বেশ আয়েস করেই উপভোগ করতে পারবেন। এখানে রয়েছে ওয়াশরুম, কিচেন, লাইব্রেরি, ওয়াই-ফাই ফ্যাসিলটি। বাসটি আপনাকে নিয়ে যাবে কলাতলী পয়েন্ট থেকে সুবরাং জিরো পয়েন্ট (টেকনাফ) এবং একই রুটে ফেরত আসবে। বাসটির রয়েছে দুটি ডেক (Upper Deck and Lower Deck), আর সেই অনুযায়ী টিকেট এর প্রাইজে তারতম্য রয়েছে।
রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড (Radiant fish world)
পর্যটন নগরী কক্সবাজার-এর একটি অন্যতম আকর্ষণ রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক মানের প্রথম এই অ্যাকোয়ারিয়ামটি তার অভিনব ফিচারের মাধ্যমে নজর কেড়েছে ছোট-বড় সকলের। আর কেনই বা তা হবে না ! সমুদ্র-ভ্রমণের এক পর্যায়ে যদি গভীর সমুদ্রের চমৎকার থ্রিল পেয়ে যান, তাহলে আর মন্দ কি!
মালয়েশিয়ান টেকনলজিতে তৈরি এই অ্যাকোয়ারিয়ামটিতে রয়েছে সামুদ্রিক ও মিঠাপানির প্রায় ১০০ প্রজাতির মাছ। এখানে আরো আছে বিলুপ্তপ্রায় অনেক মাছ এবং সামুদ্রিক প্রাণি। কক্সবাজার মেইন রোডের ঝাউতলা-তে অবস্থিত এই অ্যাকোয়ারিয়ামটি। দর্শনার্থীদের বিনোদনের জন্য এটিকে ঘিরে সাজানো হয়েছে বৈচিত্রময় সব আয়োজন। মুভি থিয়েটার, লাইভ ফিশ রেস্টুরেন্ট, ছবি তোলার জন্য অত্যাধুনিক কালার ল্যাব ও শিশুদের জন্য প্লে-জোনসহ রয়েছে আরো অনেক সুযোগ-সুবিধা। সকাল ৯ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত ফিস ওয়ার্ল্ড-এর কাউন্টার ওপেন থাকে। শুধু বিনোদনই নয়, আপনার জ্ঞানের পরিধি আরো বাড়াতে পরিবার-প্রিয়জন নিয়ে ঘুরে আসতে পারেন রেডিয়েন্ট ফিস ওয়ার্ল্ড-এ।
হর্স রাইডিং এবং কোয়াড বাইক রাইডিং (Horse Riding and Bike Riding)
সমুদ্রের পাড় দিয়ে ঘোড়া ছুটিয়ে চলার দৃশ্য আমাদের প্রায় সকলেরই পরিচিত। আর চাইলে আপনি নিজেই এক্সপেরিয়েন্স করতে পারেন এমন একটি ইভেন্ট। হর্স রাইডিং কক্সবাজার-এ আগত পর্যটকদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়। এখানকার সব বিচ-এই হর্স রাইডিং-এর অপশন পাবেন। এই ঘোড়াগুলো ছোট কিংবা মাঝারি আকারের হয়, ফলে হর্স রাইডিং-এ পারদর্শী না হলেও আপনি চড়তে পারবেন ঘোড়ার পিঠে। ছাড়া, আপনি চাইলে আপনার হোটেল থেকে সরাসরি ঘোড়া বুক করে নিতে পারেন, তবে সেক্ষত্রে ভাড়ার কিছুটা তারতম্য হতে পারে।
কোয়াড বাইক বা বিচ বাইক রাইডিং-ও বেশ মজার ইভেন্ট। যেহেতু কোয়াড বাইকগুলো তিন চাকার হয়ে থাকে, তাই এটি চালানোর জন্য আপনাকে বাইক রাইডিং জানতে হবে না। কক্সবাজার বিচ-এ কোয়াড বাইক-এ উঠে ছবি তোলা খুব্ কমন একটি বিষয়। টাইম এবং ডিস্ট্যান্স অনুযায়ী এসব বাইকের ভাড়া হয়ে থাকে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। হর্স রাইডিং-এর মত প্রায় সকল বিচ-এই এভেইলেবল থাকে কোয়াড বাইক। আপনি নিজের সময় এবং সুবিধা অনুযায়ী শুরুতেই দরদাম করে নিতে পারেন।
প্যারাসেইলিং (Parasailing)
কিছুদিন আগেও বাংলাদেশে প্যারাসেইলিং-এর কথা বেশিরভাগ টুরিস্টই ভাবতে পারতেন না, তবে এখন আপনি চাইলে কক্সবাজার-এই নিতে পারেন ওয়ার্ল্ড-ফেমাস এই অ্যাক্টিভিটির ফান। হিমছড়ির দরিয়ানগর পয়েন্ট-এ আপনি এভেইল করতে পারবেন প্যারাসেইলিং। গড়ে ৫মিনিট ধরে আপনি পেতে পারেন শূন্যে ভেসে থাকার অনুভূতি। সেজন্য আপনাকে গুনতে হবে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মতো। মাটি থেকে প্রায় ৩০০ থেকে ৫০০ ফুট উপরে ভেসে ভেসে বিচ দেখার অনুভূতি ঠিক কতোটা এক্সাইটিং হতে পারে, তা হয়তো আমরা কল্পনা করতেই পারি!
তবে, আপনার যদি উচ্চতাভীতি, অর্থাৎ Acrophobia থেকে থাকে, তাহলে বেশ খানিকটা বুঝেশুনে প্যারাসেইলিং এর সিদ্ধান্ত নিন। এছাড়াও হার্ট পেশেন্টদের ক্ষেত্রেও প্রয়োজন বিশেষ সতর্কতা। আপনার প্যারাসেইলিং এক্সপেরিয়েন্সকে সেইফ এবং সিকিউরড করতে সবসময় রয়েছে স্পেশালাইজড টীম। যেকোনো পরিস্থিতিতে তাদের সহায়তা পাবেন।
কায়াকিং (Kayaking)
কায়াকিং হলো হ্যান্ড প্যাডেল চালিত সরু বোটে করে ঘুরে বেড়ানো। মূলত এই বোটটির নাম ‘কায়াক’, এবং এজন্যই এই রাইডের নাম কায়াকিং। আউটডোর অ্যাক্টিভিটি হিসেবে পুরো বিশ্বজুড়ে কায়াকিং বেশ ফেমাস হলেও বাংলাদেশে এর প্রচলন হয় রিসেন্টলি। কক্সবাজার-এ কায়াকিং করতে চাইলে আপনাকে চলে যেতে হবে হিমছড়ির রেজু খাল-এ। কায়াকিং এর সময় অনুযায়ী খরচ পড়বে ৫০ থেকে ২০০ টাকার মধ্যে। একটি বোটে ২ থেকে ৩ জন ওঠার সুযোগ রয়েছে। পানির শান্ত প্রবাহের মধ্য দিয়ে দু’পাশের পাহাড়ের নয়নাভিরাম দৃশ্যে হারিয়ে যেতে কায়াকিং-এর জুড়ি নেই। আপনার সেফটি এনসিওর করতে রয়েছে লাইফজ্যাকেটের ব্যবস্থা।
সার্ফিং (Surfing)
কায়াকিং-এর মতো সার্ফিং-ও বিশ্বব্যাপি বেশ পরিচিত, তবে বাংলাদেশে এটার প্রচলন বেশি দিনের না। ফেনীল জলরাশির উপর দিয়ে ছুটে চলা নিঃসন্দেহে একটি রোমাঞ্চকর অনুভূতি এবং লাইফলং এক্সপেরিয়েন্স। পানির স্বচ্ছতার কারণে কক্সবাজার-এর বিচগুলো সার্ফিং-এর জন্য ব্যাস সুবিধাজনক। প্রায় সব বিচেই আপনি সার্ফারদের দেখতে পাবেন। ইনানী, সুগন্ধা, লাবনী ও কলাতলী বিচ-এ রয়েছে সার্ফিং সুবিধা।
শপিং
শপিং এবং ঘোরাঘুরি যেন একই মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠ, একটি অপরটির সাথে এতটাই গভীরভাবে জড়িত। আর ট্রিপটি যদি হয় কক্সবাজারে, তাহলে এক্সপেরিয়েন্সের পাশাপাশি ঝুলি ভর্তি করে কিনে আনতে পারেন নানা রকম জিনিস।
কক্সবাজার-এ শপিং-এর সবচেয়ে জনপ্রিয় জায়গাটি হলো বার্মিজ মার্কেট। জানা যায়, এই মার্কেটটি ছিল উনাং নামের একজন রাখাইন নারীর বাসা, যেখানে তিনি ক্ষুদ্র পরিসরে হাতে তৈরী বিভিন্ন পণ্য কেনা-বেচা শুরু করেন। ধীরে ধীরে এই ব্যবসায় প্রসার লাভ করে এবং পণ্যের লিস্টও বড় হতে থাকে। বর্তমানে বার্মিজ আচার, চকোলেট, ড্রেস,স্যান্ডেল, লুঙ্গি, প্রসাধনীসহ হাজারো রকম জিনিসের বিশাল কালেকশন পাবেন এখানে।
আপনি যদি দেশি খাবারের ভক্ত হয়ে থাকেন, তাহলে কক্সবাজার-এর শুঁটকি মিস করা একদমই উচিত হবে না। কলাতলী কিংবা সুগন্ধা বিচ-এই পেয়ে যাবেন শুঁটকির বিশাল বাজার। এদিককার শুঁটকি ব্যবসায়ীদের অধিকাংশই স্থানীয়, ফলে প্রায় সারা বছরই পাবেন নানা রকম শুঁটকির আয়োজন। মলা, লইট্টা, ছুরি, কোরাল, চিংড়ি, রূপচাঁদা ইত্যাদি শুঁটকির চাহিদাই বেশি থাকে। মাছভেদে এসব শুঁটকির দাম পড়তে পারে কেজি প্রতি ৫০০ থেকে ২৫০০ টাকা। কয়েকদিনের ট্রিপ শেষে বন্ধু-বান্ধব বা আত্মীয়-পরিজনের জন্য নিয়ে যেতে পারেন বিভিন্ন রকমের শুঁটকি। শুঁটকি কেনার জন্য ট্রিপের লাস্ট দিনটি রাখাই ভালো, কেননা এটার গন্ধ অনেকের কাছে ভালো না-ও লাগতে পারে।
ভ্রমণের স্মৃতি ধরে রাখতে নিজের এবং প্রিয়জনের জন্য কিনতে পারেন সুভেনির ( Souvenir). এছাড়াও আপনার শপিং লিস্টে রাখতে পারেন রুচিশীল শোপিসের কিছু কালেকশন। এই আইটেমগুলোর জন্য ঝিনুক মার্কেট সবচেয়ে পপুলার অপশন। লাবনী বিচ সংলগ্ন এই মার্কেটে রয়েছে শামুক, ঝিনুক ইত্যাদি দিয়ে তৈরী চমৎকার সব জিনিস। এখানে ফিক্সড প্রাইসের দোকান যেমন আছে, তেমনি আছে দরদাম করারও সুযোগ। এছাড়াও কক্সবাজার-এর সব বিচেই ঝিনুক-শামুকের পন্য ফেরি করতে দেখা যায়, চাইলে সেখান থেকেও কিনতে পারেন, তবে সেক্ষেত্রে দাম একটু কম-বেশি হতে পারে।
ফুডস
কোথাও ঘুরতে যাওয়ার প্ল্যান করলে সেখানকার খাবার-দাবার সম্পর্কে আইডিয়া থাকাটা খুব জরুরি। আর যদি আপনি হয়ে থাকেন ভোজনরসিক তাহলে তো কথাই নেই। কক্সবাজার সৈকত- এ প্রতিদিন লাখো পর্যটকের আগমন ঘটে, তাদের টেস্ট-ও হয় বাহারি। দর্শনার্থীদের আপ্যায়নের জন্য কক্সবাজারে গড়ে উঠেছে দেশি-বিদেশি হরেক রকমের রেস্তোরাঁ ও ক্যাফে। ফলে,আপনার পছন্দের তালিকা যতই ডাইভার্স হোক না কেনো, সবকিছুই পেয়ে যাবেন হাতের নাগালে।
কক্সবাজারের খাবারের মধ্যে সিফুড-এর চাহিদা ব্যাপক। নোনা পানির আধিক্য থাকায় এখানকার সিফুড-এর স্বাদ একেবারেই অতুলনীয়। স্পাইসি ক্র্যাব (Spicy Crab), শ্রীম্প ও লবস্টার (Shrimp and Lobster), লইট্টার বিভিন্ন রেসিপি, গ্রীল্ড ভেটকি, কোরাল ও লাক্ষা, রূপচাঁদা, স্কুইড, এমনকি অক্টোপাসও এখানে এভেইলেবল। আপনার ডাইন-ইন এক্সপেরিয়েন্সকে আরো এনরিচ করতে আছে লাইভ ফিশ, যেখানে ফিশট্যাংক থেকে আপনার পছন্দের মাছটি বেছে নিতে পারেন। এখানকার প্রায় সব রেস্টুরেন্টেই এই খাবারগুলো পাওয়া যায়। তবে লাইভ ফিশ এনজয় করতে চলে যেতে হবে EFC - A Live Fish Restaurant-এ। কক্সবাজার মোটেল রোডে মোটেল শৈবাল-এর অপজিটে এটি লোকেটেড।
দেশি খাবারের মধ্যে যেটা সবচেয়ে বেশি পপুলার, সেটা হলো রকমারি সব ভর্তা। এছাড়াও রয়েছে দেশি মাছ-মাংস থেকে শুরু করে শুঁটকিসহ আরো অনেক কিছু। দেশি কুইজিনের জন্য পপুলার রেস্টুরেন্টগুলোর মধ্যে পানশী, ঝাউবন, পউষী, নিরিবিলি ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। আপনি যদি ধোঁয়াওঠা কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে বিচ ভিউ এনজয়, সেই আয়োজনেও পিছিয়ে নেই কক্সবাজার। রয়েছে ইন্টারন্যাশনাল স্ট্যান্ডার্ডের ক্যাফে ও রেস্টুরেন্টস, যেখানে পেয়ে যাবেন কফি থেকে শুরু করে অলমোস্ট সব ধরণের ফাস্টফুড, চাইনিজ, ইন্ডিয়ানসহ অনেকরকম অপশন। মারমেইড ক্যাফে, কয়লা, কোভ, হান্ডি ইত্যাদি রেস্টুরেন্টে পেয়ে যাবেন ফরেইন কুইজিনের বিশাল সমারোহ।
কক্সবাজার ট্রিপ-এ আপনার সাথে আছে শেয়ারট্রিপ !
কক্সবাজার ট্রাভেল করতে রয়েছে বাস কিংবা প্লেন। আপনার প্রায়রিটি যদি হয় শর্ট টাইমে কমফোর্টেবল জার্নি, সেক্ষেত্রে ফ্লাইট আপনার জন্য বেস্ট অপশন। শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ছেড়ে এক ঘন্টারও কম সময়ে আপনাকে পৌঁছে দিবে গন্তব্যে, ফলে গোটা দিনজুড়েই আপনি এক্সপ্লোর করতে পারেন কক্সবাজার। তাছাড়া, ফ্যামিলির সিনিয়র সিটিজেনদের নিয়ে ভ্রমণ করতে হলে নিঃসন্দেহে এয়ার ট্রাভেল এর বিকল্প নেইএভেইল করতে পারেন।
শেয়ারট্রিপ আপনাকে দিচ্ছে ঢাকা-কক্সবাজার ফ্লাইটের দুর্দান্ত সব অফার। আপনার টোটাল ট্রিপকে পারফেক্টলি প্ল্যান করতে আছে হোটেল এবং হলি ডে প্যাকেজসহ আকর্ষণীয় ডিলস। চাইলেই আপনার পছন্দ অনুযায়ী কাস্টোমাইজ করে নিতে পারেন ককাবাজার ট্রিপ। মাত্র কয়েকটি ট্যাপেই বুক করে ফেলুন আপনার পছন্দের ফ্লাইটটি। যেকোনো ডিটেইলের জন্য ভিজিট করুন আমাদের ওয়েবসাইট www.sharetrip.net এবং ডাউনলোড করুন শেয়ারট্রিপ অ্যাপ। ট্রাভেল সংক্রান্ত যেকোনো তথ্যের জন্য মেইল করুন vacation@sharetrip.net ঠিকানায় অথবা কল করুন আমাদের হটলাইন নাম্বার +৮৮-০৯৬১৭৬১৭৬১৭।