ফরেইন ট্রিপের কথা ভাবলেই আমাদের লিস্টে থাকে অনেক ধরণের প্ল্যানিং। হতে পারে সেটা বাজেট, ছুটিসহ অন্য অনেক কিছু। তবে বিদেশ ভ্রমণে যাওয়া প্রসঙ্গে যে ব্যাপারটি অনেক ট্রাভেলারকেই চিন্তিত করে তোলে তা হলো ভিসা প্রক্রিয়া। কোনো কোনো ক্ষেত্রে ভিসার জটিলতার জন্য শেষ পর্যন্ত স্বপ্নের ছুটিটাই হয়তো বাতিল হয়ে যায়। এজন্যই হয়তো আপনার মনে প্রশ্ন জাগতে পারে যে, বাংলাদেশের পাসপোর্ট দিয়ে কোন কোন দেশে যাওয়া যায়। তাই শেয়ারট্রিপ আপনাকে দিচ্ছে ভিসা ফ্রি কান্ট্রি গুলো ভ্রমণের একটি পরিপূর্ণ গাইড!
আজকের ব্লগে আপনি এমন সব দেশ সম্পর্কে জানতে পারবেন যেখানে যেতে কোনও ভিসার প্রয়োজন নেই এবং এমন কিছু দেশ যেখানে বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলে কেবল ভিসা অন অ্যারাইভাল (VoA), ই-ভিসা দিয়ে ঘুরে দেখতে পারবেন আপনার পছন্দের স্পট। এমন একটা ব্যাপার কিন্তু যেকোনো ভ্রমণপ্রেমীর জন্যই দারুণ সুখবর, তাই না? তাই দেরি না করে ভিসা প্রসেসিং-এ শেয়ারট্রিপ এর সহায়তা নিন, দেখে নিন এই ব্লগে উল্লেখিত ৪২টি দেশের তালিকা আর ঝটপট আপনার ভ্যাকেশন প্ল্যান করে নিন!
বাংলাদেশী পাসপোর্ট দিয়ে ভিসা অন-অ্যারাইভাল, ই-ভিসা, বা ভিসা ছাড়া যে দেশগুলিতে যেতে পারবেন
ভিসা ছাড়াও যে বিশ্বের অনেকগুলো দেশে যাওয়া যায়, তা হয়তো অনেকেই জানেন।
তবে বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলেই আপনি কোনো ধরনের ভিসার ছাড়াই ভ্রমণের সুযোগ পাবেন ২০টি চমৎকার দেশে আর এটি অবশ্যই যেকোনো ট্রাভেলারের জন্য দারুণ সুখবর।
তবে ভিসা ছাড়াই তালিকায় থাকা ৪২টি দেশের যেকোনো একটিতে যেতে হলে আপনাকে শুধুমাত্র কয়েকটি বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, যেমনঃ
- আপনাকে ভিসা অন অ্যারাইভাল বা ই-টি-এ/ই-ভিসা সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবে
- আপনার পাসপোর্টটি অবশ্যই বৈধ হতে হবে। সাধারণত, বেশিরভাগ দেশের ক্ষেত্রেই বাংলাদেশী পাসপোর্টটি ডেস্টিনেশন থেকে এক্সিটের তারিখ , অর্থাৎ দেশটি ছেড়ে আসার তারিখের পর থেকে ৬ মাসের জন্য বৈধ হতে হয় এবং
- ট্রাভেল করার আগে যে দেশে যাচ্ছেন সেটির জন্য সঠিক স্বাস্থ্য বীমা (Health Insurance) কিনে রাখা জরুরি। আপনি কোথায় যাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে বীমার ধরন এবং মূল্য ভিন্ন হতে পারে।
সব রিকোয়ারমেন্ট জেনে নেওয়ার পর বাংলাদেশি পাসপোর্ট দিয়ে খুব সহজে ৪২টি দেশে খুব সহজেই যেতে পারেন
- এশিয়া - ৬টি দেশ - ভুটান, কম্বোডিয়া, মালদ্বীপ, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, পূর্ব তিমুর।
- দক্ষিণ আমেরিকা - ১টি দেশ - বলিভিয়া।
- উত্তর আমেরিকা (ক্যারাবিয়ান অঞ্চল) - ১১ টি দেশ - বাহামাস, বার্বাডোস, ব্রিটিশ ভার্জিন দ্বীপসমূহ, ডোমিনিকা, গ্রেনাডা, হাইতি, জামাইকা, মন্টসেরাট, সেন্ট কিটস এবং নেভিস, সেন্ট ভিনসেন্ট ও গ্রেনাডাইনস, ট্রিনিডাড ও টোব্যাগো।
- ওশিয়ানিয়া - ৮টি দেশ - কুক দ্বীপপুঞ্জ, ফিজি, কিরিবাস বা কিরিবাটি, মাইক্রোনেশিয়া, নিউয়ে, সামোয়া, ভানুয়াটু, টুভালু।
- আফ্রিকা - ১৬টি দেশ - লেসোথো, গাম্বিয়া, বুরুন্ডি, কেপ ভার্দে, কমোরো দ্বীপপুঞ্জ, জিবুতি, গিনি-বিসাউ, লেসোথো, মাদাগাস্কার, মৌরিতানিয়া, মোজাম্বিক, রুয়ান্ডা, সেশেল, সিয়েরা লিওন, সোমালিয়া, টোগো।
তথ্যসূত্র: visaguide.world এবং prothomalo.com
বাংলাদেশি পাসপোর্ট থাকলে ভিসা অন-অ্যারাইভাল (Visa on Arrival বা VoA) নিয়ে ঘুরে আসতে পারবেন যেসব দেশে
আগে থেকে কোনও প্রকার ভিসা আবেদন ছাড়াই বাংলাদেশী পাসপোর্ট দিয়ে উপভোগ করতে পারবেন অসাধারণ কিছু স্পট- এটা হয়তো অনেক ভ্রমণপ্রেমীরই শুধু কল্পনায় ছিল। ব্যাপারটা এখন পুরোপুরি সত্যি আর তা হয়তো অনেকে জেনেও থাকবেন। কিন্তু বাংলাদেশিদের জন্য অন এরাইভাল ভিসা ঠিক কোন কোন দেশে আছে তা নিয়ে বিভ্রান্তি থাকতে পারে। আজকে একনজরেই দেখে নিতে পারবেন সেই দেশগুলোর তালিকা আর চট করে প্ল্যান করে ফেলতে পারবেন আপনার পরবর্তি ট্রিপ।
বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলে ভিসা অন-অ্যারাইভাল (VoA) পাবেন যেসব দেশে
- এশিয়া - মালদ্বীপ, ভুটান, নেপাল, টিমর-লেস্টে, শ্রীলঙ্কা, কম্বোডিয়া
- আফ্রিকা - কাবো ভার্দে, মৌরিতানিয়া, বুরুন্ডি, কমোরোস, গিনি-বিসাউ, মাদাগাস্কার, রুয়ান্ডা, সিশেলস, সিয়েরা লিওন, সোমালিয়া
- দক্ষিণ আমেরিকা - বলিভিয়া
- ওশিয়ানিয়া - টুভালু
তথ্যসূত্র: visaguide.world
ভিসা অন-অ্যারাইভাল এমন এক ধরনের ভিসা যেটির মাধ্যমে ডেস্টিনেশনে পৌঁছানোর আগে আপনাকে ভিসার জন্য আবেদন করতে হবে না । অর্থাৎ, আপনাকে আগে থেকে কোনো ডকুমেন্ট সংগ্রহ করার দরকার নেই। আপনি যেই দেশে যাচ্ছেন সেখানে পৌঁছে একটি অনুমোদিত পয়েন্টে প্রয়োজনীয় ফি দিয়েই আপনি আপনার ভিসাটি কালেক্ট করে নিতে পারবেন। এই সম্পূর্ণ প্রসেসটি দেশভেদে কিছুটা পরিবর্তিত হতে পারে, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আপনি আপনার আবেদন জমা দেওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে আপনার ভিসা হাতে পেয়ে যাবেন। ভিসা অন-অ্যারাইভাল সাধারণত ট্যুরিস্টরাই ব্যবহার করে থাকেন এবং এর মেয়াদ থাকে ১৪ থেকে ৩০ দিন পর্যন্ত। তবে ভিসা অন-অ্যারাইভালের যেকোনো শর্ত উক্ত দেশগুলোর সিধান্ত অনুযায়ী চেঞ্জ হতে পারে।
বাংলাদেশী পাসপোর্ট দিয়ে ভিসা অন-অ্যারাইভালের জন্য আবেদন করার জন্য কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন?
- একটি বৈধ পাসপোর্ট
- রিসেন্ট ছবি (সাধারণত ৩ মাসের বেশি পুরানো নয়)। ছবির সাইজ নির্ভর করবে যেই দেশে যাচ্ছেন সেখানকার রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী
- ভিসা আবেদনপত্র (Visa Application Form)
- প্রয়োজনীয় ফি দিতে ইন্টারন্যাশনাল ক্রেডিট কার্ড কিংবা ক্যাশ
- ফ্লাইট টিকিট এবং হোটেল রিজার্ভেশনের কপি
- ভ্রমণসূচী (Travel Itinerary) ইত্যাদি।
বাংলাদেশী পাসপোর্ট দিয়ে ই-ভিসায় ঘুরে আসতে পারবেন যে দেশগুলো থেকে
বর্তমান সময়ে প্রায় সব ট্রাভেলারদের মধ্যেই ই-ভিসা বেশ পরিচিত। ই-ভিসা মূলত সাধারণ ভিসার একটি ইলেক্ট্রনিক ভার্সন । এটি একটি নিয়মিত ভিসার মতোই কাজ করে তবে নিয়মিত ভিসার তুলনায় কিছু এটির সুযোগ-সুবিধা কিছুটা বেশি, কেননা ই-ভিসার আবেদনের জন্য আপনাকে এম্বাসির লম্বা লাইনে মোটেই দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। যেই দেশে যেতে চান, সেখানের এম্বাসির পোর্টালে প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস আপলোড করলেই আপনার কাজ শেষ। অর্থাৎ, আপনাকে আর এম্বাসিতে সশরীরে উপস্থিত থাকতে হবে না বা ডকুমেন্টের কোনো হার্ড কপিও জমা দিতে হবে না। তাই বুঝতেই পারছেন, ই-ভিসা প্রক্রিয়াটি কতটা ঝামেলামুক্ত, সহজ এবং সময় সাশ্রয়ী!
বাংলাদেশী পাসপোর্টে ই-ভিসা অনুমোদনকারী দেশের তালিকা
- এশিয়া: বাহরাইন, কাজাখস্তান, কিরগিজস্তান, কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া, মায়ানমার, কাতার, তাজিকিস্তান, ভিয়েতনাম
- ইউরোপ: আলবেনিয়া
- আফ্রিকা: বেনিন, বটসোয়ানা, বুর্কিনা ফাসো, ক্যামেরুন, কঙ্গো জাতীয় প্রজাতন্ত্র, আইভরি কোস্ট (কোট ডিভোয়ার), জিবুটি, ইকুয়েটোরিয়াল গিনি, ইথিওপিয়া, গাবন, গিনি, কেনিয়া, মালাউই, মোজাম্বিক, নাইজেরিয়া, সাও টোমে এবং প্রিন্সিপে, দক্ষিণ সুদান, টোগো, উগান্ডা, জাম্বিয়া, জিম্বাবুয়ে
- উত্তর আমেরিকা (ক্যারাইবিয়ান অঞ্চল): অ্যান্টিগুয়া এবং বারবুডা
- দক্ষিণ আমেরিকা: সুরিনাম
তথ্যসূত্র: visaguide.world
বাংলাদেশ থেকে ই-ভিসার জন্য আবেদন করার সময় কি কি ডকুমেন্ট প্রয়োজন?
আপনার ই-ভিসার আবেদন প্রক্রিয়াটি দ্রুত শেষ করতে হলে আগে থেকে কিছু ডকুমেন্ট প্রস্তুত রাখতে হবে। যদিও আপনি যে দেশে যাচ্ছেন তার উপর নির্ভর করে ডকুমেন্টগুলো কিছুটা ভিন্ন হতে পারে, তবে বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলে ই-ভিসার জন্য আবেদন করার সময় নিচের ডকুমেন্টগুলো হাতের কাছে রাখতে পারেন, যেমনঃ
- আপনার ব্রাউজারের সর্বশেষ সংস্করণ বা লেটেস্ট ভার্সন (যদি আপনি ইন্টারনেট এক্সপ্লোরার ব্যবহার করেন তবে সংস্করণটি 9.0 হওয়া ভাল, এবং মজিলা ফায়ারফক্সের জন্য এটি 3.5)
- শক্তিশালী ইন্টারনেট কানেকশন
- প্রয়োজনী ডকুমেন্ট ডাউনলোড এবং সেভ করতে Adobe Acrobat Reader (সংস্করণ 8.0 বা এরচেয়েও লেটেস্ট ভার্সন)
- আপনার বর্তমান এবং পুরানো পাসপোর্ট (যদি থেকে থাকে)
- রিসেন্ট ছবি (সাধারণত 3 মাসের বেশি পুরানো নয়)
- আপনার ই-মেইল এবং বাসার ঠিকানা
- এনআইডি, জন্মনিবন্ধন (অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য), চাকরির প্রশংসাপত্র ইত্যাদি।
বাংলাদেশী পাসপোর্ট থাকলেও যেসব দেশ ভ্রমণ করতে আপনাকে ট্যুরিস্ট ভিসা নিতে হবে
নো-ভিসা, ই-ভিসা এবং ভিসা অন-অ্যারাইভাল নিয়ে সব প্রয়োজনীয় তথ্য জানার পর এবার পালা ভিসাসহ ট্রাভেল নিয়ে জানার। আপনার যদি একটি বৈধ বাংলাদেশী পাসপোর্ট এবং একটি ভিসা থাকে, তাহলে আপনি ঘুরে দেখতে পারেন পৃথিবীর অনন্য ১৬১টি দেশ! প্রকৃতির ভিন্ন ভিন্ন রূপ, চোখ ধাঁধানো আর্কিটেকচারসহ বিভিন্ন জনপ্রিয় স্পটের ছবিগুলো মডার্ন ডিভাইসটিতে ক্যাপচার করতে বেশ ভালোই লাগবে! চলুন তবে জেনে নেওয়া যাক এই নিয়ে সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
বাংলাদেশ থেকে ট্যুরিস্ট ভিসা আবেদনের জন্য কিছু বেসিক ডকুমেন্ট
- ভিসা আবেদনপত্র (Visa Application Form)
- একটি বৈধ পাসপোর্ট (অন্তত ছয় মাসের বৈধতা) যেখানে পরিদর্শনকারী দেশটির জন্য প্রয়োজনীয় কয়েকটি ফাঁকা পৃষ্ঠা রয়েছে।
- পুরানো পাসপোর্ট (যদি থাকে)
- রিসেন্ট ছবি (সাধারণত ৩ মাসের বেশি পুরানো নয়)। ছবির সাইজ নির্ভর করবে যেই দেশে যাচ্ছেন সেখানকার রিকোয়ারমেন্ট অনুযায়ী
- ফ্লাইট টিকিট এবং হোটেল রিজার্ভেশনের কপি
- ভ্রমণসূচী (Travel Itinerary) ইত্যাদি
- আর্থিক স্বচ্ছলতার প্রমাণ (সাধারণত লাস্ট ৬ মাসের ব্যাংক স্টেটমেন্ট)
- ম্যারেজ সার্টিফিকেট
- এনআইডি, জন্মনিবন্ধনপত্র (অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য) ইত্যাদি।
আপনার পছন্দের ট্রিপে আপনার জন্য আছে শেয়ারট্রিপ!
আপনার স্বপ্নের ভ্যাকেশনকে আরও বেশি আরামদায়ক ও সহজ করতে শেয়ারট্রিপ আপনাকে দিচ্ছে কমপ্লিট ট্রাভেল সল্যুশন। ভিসা আবেদন, বেস্ট ফ্লাইট ফেয়ার, টপ হোটেল ও রিসোর্টে অবিশ্বাস্য রেটসহ আপনার প্রয়োজনীয় সবকিছু পেয়ে যাবেন একটিমাত্র প্ল্যাটফর্মে। এছাড়া, বছরজুড়ে আকর্ষণীয় সব অফার তো থাকছেই! বেস্ট হলিডে প্যাকেজ এবং ট্রাভেল সংক্রান্ত যেকোনো কিছু জানতে আজই ব্রাউজ করুন www.sharetrip.com এবং ডাউনলোড করুন ShareTrip অ্যাপ । আরও জানতে মেইল করুন vacation@sharetrip.net-এ এবং কল করুন +8809617617617 নম্বরে।
ভিসা সংক্রান্ত কনফিউশন এড়াতে দেখে নিন আমাদের জনপ্রিয় ব্লগঃ
ইউকে মাল্টিপল ট্যুরিস্ট ভিসা থাকলে বাংলাদেশী পাসপোর্ট দিয়ে কোন কোন দেশ ঘুরে আসতে পারবেন ?
কানাডা ট্যুরিস্ট ভিসা থাকলে বাংলাদেশী পাসপোর্ট দিয়ে কোন কোন দেশ ঘুরে আসতে পারবেন ?
শুধুমাত্র শেনজেন ভিসা দিয়েই ঘুরে আসুন আরো ১৩টি দেশ!